ঢাকা, ০৬ সেপ্টেম্বর (ঢাকা পোস্ট) : বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো ঘাটতি থাকুক, তা ঢাকাও চায় না। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক সামরিকবিষয়ক বিভাগের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিরা রেজনিক সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং এর আগে হওয়া বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নবম নিরাপত্তা সংলাপে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংলাপে নিরাপত্তা ইস্যুসহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা চায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক যেন আরও গভীরতর হয়। সেটা ইকোনমিক, পলিটিক্যাল, সবদিক দিয়েই। আমরা চাইছি তাদের সঙ্গে সম্পর্কে যেন কোনো ঘাটতি না থাকে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তারা নির্বাচন নিয়ে জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা বদ্ধ পরিকর। প্রধানমন্ত্রীও সে কথা বলেছেন। এখন নির্বাচন কমিশন বাকি কাজগুলো করছে। ইলেকশন কমিশনের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়েও তারা রাজি রয়েছেন।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারির সঙ্গে সব ধরনের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু আছে। তারা চায় না ইন্দো প্যাসিফিকে কোনো সুনির্দিষ্ট একটি দেশ আধিপত্য বিস্তার করুক। তারা চায় সমুদ্র অবাধ ও মুক্ত থাকুক।
প্রতিরক্ষা বিষয়ক জিসোমিয়া ও আকসা চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখানে সরাসরি জিসোমিয়া ও আকসা নিয়ে আলোচনা হয়নি। সেটা প্রতিরক্ষা সংলাপে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি নিয়ে কাজ রয়েছে।
তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সংলাপে উন্নীত করেছি। সেখানে জাপানও আমাদের কনসিডার করছে, ওদের অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্সে আমাদের তারা ক্যান্ডিডেট কান্ট্রি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সুতরাং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি। আগামীতে তাদের সঙ্গেও সেভাবেই আলোচনা হবে বলে আমরা আশা রাখি।
র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে ওরা আলোচনা করেছে। আমরা বলেছি, প্রতিটা হিউম্যান রাইটস ইস্যু নিয়ে যে অ্যালিগেশন আসে, যে রিপোর্ট আসে, প্রতিটিকেই আমরা খুব সহজেই নেই। আমরা বাহিনীর সঙ্গে আলাপ করে সেগুলোর উত্তর বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দেই। আমরা আমাদের দেশে কোনো ইম্যুনিটির সুযোগ রাখি না। আমাদের প্রতিটি বাহিনীর এসওপি রয়েছে।
তিনি বলেন, একটা গুলি খরচ করলেও জবাবদিহি করতে হয়। যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনায় সব সময় সরকার যে ইনভলব থাকে সেটা তো নয়। আমরা কিছু দিন আগে দেখেছি যে, গাজীপুরে একজন শ্রমিক নেতা মারা গেছেন, সেখানে সরকারের কিছু করার নেই, তবে শেষ পর্যন্ত আমাদের শেষ পর্যন্ত জবাবদিহির ব্যাপার থাকে। আমাদের ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যার একটি দেশ, সেখানে তো এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আমাদের বাহিনীর কেউ কিছু করলে এসওপি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা র্যাবের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে লিখিতভাবে জবাব দিয়েছি। ওদের প্রসেসের মধ্যে সেটা আছে। এ নিয়ে আমরা সজাগ আছি, এখানে দায়মুক্তির কোনো সুযোগ নেই। নিরাপত্তা সংলাপে ঢাকার পক্ষে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম। অন্যদিকে ওয়াশিংটনের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মার্কিন রাজনৈতিক সামরিক বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিরা রেজনিক।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan